অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ কি এবং অল্প বয়সে চুল পাকা বন্ধ করার উপায়
সূচীপত্রঃঅল্প বয়সে চুল পাকার কারণ কি । চুল মানব শরীরের সুন্দর্য্যের এক অনন্য অবদান । চুল আমাদের শরীরের ভুষন । নারীদের ক্ষেত্রে এই সুন্দর্য্য আরও বেশি দেখা যায় বিশেষ করে । কিন্তু সেই সুন্দর্য্য যদি ধীরে ধীরে নষ্ঠ হয়ে যায় তাহলে মানসিক অবস্থা একবার চিন্তা করেছেন কোন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকবে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের মত ।
কিন্তু আপনার কিছু করার থাকবে না । হ্যা আমি বলছিলাম অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ কি এই নিয়ে । দেখবেন অনেকে আছে অল্প বয়সে চুল পেকে একদম সাধা হয়ে যাওয়ার উপক্রম । কেন এই অবস্থা হয় আমরা জানব আজকে এই সমস্যা সম্পর্কে ।
শুধু অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ নয় সাথেআরো থাকবে অল্প বয়সে চুল পাকে কেন, অল্প বয়সে চুল পাকা বন্ধ করার উপায়, অল্প বয়সে চুল পাকা রোধ করার ঔষধ, চুল পাকা বন্ধ করার তেল এবং অল্প বয়সে চুল পাকার সমাধান সেই সাথে ঘরোয়া উপায় নিয়ে চলবে আলোচনা এবং সমালোচনা ।
অল্প বয়সে চুল পাকে কেন
অনেক কিছুই দায়ী এই অল্প বয়সে চুল পাকার জন্যে । চুল মানুষের সুন্দর্য্যের প্রতীক এবং প্রতিরক্ষার হাতিয়ার হিসেবে ও কাজ করে মাথার জন্যে । কিন্তু অল্প বয়সে অনেক মানুষের চুল পেকে যায় ।
অনিদ্রা, রাসায়নিক দ্রব্য, সুর্যের আলোকে বেশিক্ষন, রক্তশুন্যতা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা জনিত রোগ, পানজেরিয়া, থাইরয়েডের সমস্যা, অম্ল, পরিপাক তন্ত্রের সমস্যা, প্রোজেরিয়া রোগের মত সমস্যায় ভুগলে অল্প বয়সে চুল পেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।
এইগুলি ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিনের অভাব যেমন ভিটামিন বি১২, বি৬, ভিটামিন ডি-৩, ই এবং কপার এর মত ভিটামিন গুলির অভাবের কারনে আমাদের মধ্যে অল্প বয়সে চুল পেকে যায় ।
আরও রয়েছে যেমন বংশগত সমস্যা বা জেনেটিক সমস্যার কারনে ও চুল পেকে যায় । যারা ক্যান্সার রোগের ক্যামোথেরাপি ব্যবহার করেছেন এবং এর সাথে ম্যালেরিয়ার ঔষধ সেবন করেছেন তাদের ও অল্প চুল পাকার মত সমস্যা দেখা দেয় ।
বেশির ভাগ সময় যারা দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তারাও এই সমস্যা থেকে পার পায় না । সাময়িকের জন্যে ।
অল্প বয়সে চুল পাকা বন্ধ করার উপায়
কেউ কেউ খুবই দুশ্চিন্তায় থাকবেন যে, কম বয়সে চুল পেকে গেল অথচ এখনো বিয়ে করতে পারলাম না । অবশ্যই এটি দুশ্চিন্তারই বিষয় । এই জন্যে অনেকে সমাধান খুঁজেন যে অল্প বয়সে চুল পাকা বন্ধ করার উপায় গুলি কি ।
আমরা ও চেস্টা করছি যে আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে যদি আপনাদের একটু উপায় অন্ত হয় তাহলে তাতে আমরা খুবই আনন্দিত হব এবং নিজেকে ধন্য মনে করব । তাহলে আর দেরি না করে অল্প বয়সে চুল পাকা বন্ধ করার উপায় গুলি জেনে আসি ।
- সমস্যা সমাধানে ভিটামিনের বি১২, বি৬ ভিটামিন ডি৩, আয়রন এবং কপার সমৃদ্ধ খাবার খাবার খাওয়ার দিকে জোর দিতে হবে।
- নিজেকে সবসময় উর্ধে রাখবেন যেন মন ছোট না হয়। অট্টহাসিতে নিজেকে ভরিয়ে তুলুন পৃথিবীতে আপনার মত সুখী মানুষ নেই এই কথা বলে। অর্থাৎ স্ট্রেস থেকে দূরে রাখুন।
- কপার এবং আয়োডিন যুক্ত খাবার খান বেশি পরিমান। সাথে সিগারের বা ধূমপান থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
- চুলের ক্ষেত্রে প্রোটিনের অবদান অনস্বীকার্য তাই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান অতি জরুরি।
- পর্যাপ্ত পরিমান ঘুম যান এবং রাসায়নিক জেল এবং অন্যান্য কিছু চুলে ব্যবহার করা পরিহার করুন।
- সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান এতে খুব তাড়াতাড়ি আপনার চুল পাকা থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাবেন।
অল্প বয়সে চুল পাকা রোধ করার ঔষধ
অল্প বয়সে চুল পাকা রোধ করার জন্যে অনেক কিছু সমাধান রয়েছে। বাজারে কিন্তু পরামর্শকের অনুমতি ছাড়া বা প্রেস্ক্রাইব ছাড়া ঔষধ সেবন না করায় ভালো। বিশেষ করে স্ট্রেস, অনিয়ন্ত্রিত ঘুম, পুষ্টিহীনতার কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়।
প্রাকৃতিক উপায়ে কিছু ঔষধ রয়েছে যেগুলি পার্শপ্রতিক্রিয়া মুক্ত। যেমন মিনোক্সিডিল ও বায়োটিন। ঔষধগুলি পার্শপ্রতিক্রিয়া মুক্ত। মিনোক্সিডিল চুলের গোড়ার রক্ত সঞ্চালনের কাজ করে এবং চুলের পক্ষতা রোধ করে।
বায়োটিন হলো চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক এবং চুল পাকা রোধে অত্যন্ত কার্যকর। এই ঔষধগুলি ছাড়াও আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে চুল পাকার সমস্যা সমাধান করতে পারেন। যেমন আমলকি, নারিকেল তেল এবং কারি পাতা এই গুলি দিয়ে ও আপনি খুবই উপকৃত হবে অকালে চুল পাকা রোধ করার ক্ষেত্রে।
আমলকিতে ভিটামিন সি এর উৎস রয়েছে অনেক এটি ব্যবহারে আপনার চুলের স্বাস্থ্য বজায় থাকবে এবং কারি পাতা ও নারিকেল তেল এর মিশ্রনে আপনার চুলের রং বজায় থাকবে এবং অকাল পক্ষতা রোধ করবে ।
অল্প বয়সে চুল পাকা বন্ধ করার তেল
নতুন যখন চুল পাকার অবস্থা আমাদের নজরে আসে তখন কিন্তু আমরা খুবই উদ্ভিগ্ন হয়ে পড়ি। সঙ্গে সঙ্গে বাজারে বেনামি বিদেশী কোন তেল পেলে মাথায় ব্যবহার করি। এইটা কখনো করবেন না।
অল্প বয়সে চুল পাকা বন্ধ করার তেল হিসেবে আপনি আপনার হাতের নাগালেই অনেক ভালো মানের তেল পেতে পারেন। সচরাচর আমরা প্রতিদিন এই তেলগুলির সাথে পরিচিত এবং হাতের নাগালে পেয়ে যায়।
নারিকেল তেল, ভৃঙ্গিরাজ তেল, অলিভ অয়েল, আমলকির তেল এবং তিল তেল। এইগুলি খুবই উপকারী এবং আমরা এই তেলগুলি সচরাচর দেখে থাকি।নারিকেল তেল ও আমলকি তেল ব্যবহারে মাথার চুল পাকা রোধ করার জন্যে খুবই জনপ্রিয় তেল।
এই তেলগুলি চুলের গোড়ায় গিয়ে চুলকে মজবুত করে তুলে। আমলকি তেলে মেলানিন উৎপাদন করে চুল পাকা রোধ করতে সহায়তা করে এবং ভিটামিন সি এর উৎস রয়েছে যা রং বজায় রাখে।
ভৃঙ্গিরাজ তেল চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং চুল পাকা থেকে রক্ষা করে তুলে। তিল তেল অনেক গুনে গুনান্বিত তেল যা চুল মজবুজ করার জন্যে খুবই উপকারী কারণ এতে ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে যা চুলের রং বজায় থাকে।
অল্প বয়সে চুল পাকার সমাধান
অল্প বয়সে চুল পাকার সমাধান অনেক ভাবে অনেক রকম দেওয়া রয়েছে অনলাইনে। কিন্তু আমরাদের ভাষ্য মতে আমরা একটু ব্যতিক্রমী কিছু বলার চেষ্টা করবো যাতে আপনি খুবই আনন্দিত হন এবং উপকৃত হন।
অল্প বয়সে চুল পাকা সমস্যা নিয়ে কয়েকটি ধাপের কথা আমরা বলব যেমন মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে এবং ঘরোয়া পদ্বতিতে অল্প বয়সে চুল পাকার সমাধান বলার চেষ্টা করবো।
সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন স্ট্রেস, প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব এবং খাবারের উপর নির্ভর করে। তাছাড়াও রয়েছে দুশ্চিন্তা।
মানসিক ভাবে : মানসিক ভাবে সুস্থ থাকা অত্যন্ত জরুরি। অল্প বয়সে চুল পাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে এই মানসিক সমস্যা। নিত্যদিন মেডিটেশন করুন এবং যোগব্যায়ামে মনোযোগ দিন তাহলে মনের উপর চাপ কমে যাবে। আপনার মন যত দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকবে ততবেশি আপনার শরীর ভাল থাকবে এবং অকালে বা অল্প বয়সে চুল পাকা থেকে মুক্ত হবেন।
শারীরিক ভাবে : শারীরিক ভাবে সমস্যার কারণেও অল্প বয়সে চুল পেকে যায়। পুষ্টিহীন শরীরে চুল পেকে যায়। যেমন শরীরের ভিটামিন বি ১২ ,বি ৬ ভিটামিন ডি৩ এবং কপার, ফসফরাস এবং ভিটামিন ই এর সমস্যার কারণ দূর করার জন্যে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার প্রয়োজন।
ঘরোয়া ভাবে : নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল, আমলকি তেল, ভৃঙ্গিরাজ তেল এবং তিল তেল এই সব কিছু ব্যবহারে আপনার চুলের সমস্যা দূর হয়ে যাওয়ার সম্ভব।
নারিকেল তেলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে মাথার চুলে লাগালে চুল পাকা থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়াও রয়েছে এক চামচ আদার রস এবং মধু এক চামচ মিশিয়ে খেতে পারেন এতে করে চুল পাকা থেকে মুক্তি পাবেন অনেকাংশে।
অলিভ অয়েল এর সাথে ঝিঙে ছোট করে কেটে ভিজিয়ে রাখুন এবং তিনদিন পর্যন্ত ভিজিয়ে রাখবেন তিনদিন পরে মিশ্রণটি ভালো করে ফুটিয়ে নিন। ফুটার পরে যখন কালচে হবে তখন আপনি চাইলে সেটা আপনার চুলে লাগতে পারেন সপ্তাহে দুদিন। যা আপনার জন্যে খুবই উপকারী হবে এবং ভালো ফল পাবেন চুল পাকার সমাধান হিসেবে ।
অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ কি এই নিয়ে শেষ কথা
অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ কি নিয়ে আসলে আর বিশেষ কোন কথা নেই । আমরা একদম শেষে যেই কথাগুলি বলেছি অল্প বয়সে চুল পাকার সমাধান নিয়ে সেই নির্দেশনা গুলি মেনে চললে আশা করি আপনার সমস্যা খুব দ্রুত সমাধান হবে ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url