জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার এবং জরায়ু মুখের ক্যান্সারের চিকিৎসা
আজকে আমরা আশা করি জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বলার চেষ্টা করব। এবং এর সাথে থাকছে, জরায়ু মুখের ক্যান্সারের কারণ ও লক্ষণ, জরায়ু ক্যান্সার পরীক্ষা, জরায়ু ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে,জরায়ু মুখের ক্যান্সার হওয়ার রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো কী? জরায়ু ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে, জরায়ু মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ ,জরায়ু মুখের ক্যান্সার হলে চিকিৎসা কি? সর্বশেষে জরায়ু ক্যান্সারের টিকার দাম নিয়ে ও কথা বলার চেষ্টা করব। পোস্টসূচীপত্র
জরায়ু ক্যান্সারের কারণ ও লক্ষণ
জরায়ু ক্যান্সার হওয়ার ভয়ে থাকি আমরা সহসা। লক্ষণ গুলি কি কি তা কিন্তু আমরা অনেকে জানিনা। জরায়ু ক্যান্সারের অনেক গুলি কারণ ও লক্ষণ থাকতে পারে। তার মধ্যে আমরা কিছু কিছু গরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরবো।
- অনিয়মিত রক্তস্রাব
- রক্তের সাথে স্রাব যাওয়া
- তলপেট এবং কোমর ব্যাথা হলে
- দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব
- অতিরিক্ত সাদা স্রাব
- মাসিক বন্ধ হওয়ার পর ও আবার রক্তপাত
- সহবাসের সময় রক্তপাত
- প্রস্রাবে ব্যাথা
তাছাড়া প্রাপ্ত বয়স হওয়ার আগে যারা যৌনচার করে থাকে তাদের ও এই জরায়ু ক্যান্সার হয়ে থাকে বেশি। তাই জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আমরা ভাল করি জানি এবং নিজে সচেতন হয়।
জরায়ু মুখের ক্যান্সার হওয়ার রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো কী?
- প্রাপ্ত বয়স হয়ার আগে বিয়ে দেওয়া বা করা
- উপযুক্ত বয়স না হয়ার আগে সন্তান ধারন করা
- একাধিক ব্যক্তির সাথে যৌন মিলন করলে
- নির্দারিত সময় বাদ না দিয়ে অতিরিক্ত গর্ভ ধারন করলে
- বেশি বেশি জন্মনিরোধক বড়ি সেবন করলে
- ক্লামাইডিয়া ভাইরাসে ইনফেকশন হলে
জরায়ু ক্যান্সার পরীক্ষা
তবে মনে রাখতে হবে প্রথমের দিকে এই জরায়ু ক্যান্সার ধরা পড়লে এই রোগ সম্পূর্ণ ভাবে মুক্তি পাওয়া যায়। এমনকি জরায়ু না কেটে। এই জরায়ুর নিচের মুখ কে বলে (Cervix) সারভিক্স। এই জরায়ু ক্যান্সার পরীক্ষা করার নাম হলো কলপোস্কোপি। জরায়ুতে ক্যান্সার নির্ণয়ে এই কলপোস্কোপি পরীক্ষার অবদান বেশি। তাই চলুন এই সম্পর্কে আরো একটু ভাল করে জেনে আসি।
জরায়ু ক্যান্সার পরীক্ষায় কলপোস্কোপি কিভাবে করে ?
এবং এই নিরিক্ষনের মাধ্যমে যদি জরায়ুর ভিতর কোন সমস্যা আছে বলে সন্দেহ করে থাকে তাহলে সেখান থেকে কোন সন্দেহজনক স্তান থেকে কোষ নিয়ে সেটিকে ল্যাবরটরিতে পাঠানো হয় এবং আরো গভীর ভাবে বায়োপসি করে সমস্যা গুলি নির্ধারন করে থাকে ।
জরায়ু মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ
- মেয়েদের কম বয়সে বিয়ে না দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিকার পাওয়ার যায়।
- অধিক সন্তান ধারণ না করা ও একটি জরায়ু ক্যান্সারের প্রতিকারের মাধ্যম।
- ধুম পান না করা।
- নির্দিষ্ট বয়স থেকে জরায়ু ক্যান্সারের প্রতিরোধক টিকা দেওয়ার মাধ্যমে।
- ৩০ থেকে ৩৫ বছরের বয়সের প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর ভায়া টেস্ট করা।
- একাধিক যৌন সঙ্গীর সাথে মেলামেশা না করা।
- যৌন-প্রজননতন্ত্র সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্বি করা।
জরায়ু মুখের ক্যান্সার হলে চিকিৎসা কি?
তাই আজকের এই আর্টিকেলে জরায়ু মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার মাধ্যমে জরায়ু মুখের ক্যান্সারের হলে চিকিৎসা কি সেই সম্পর্কে বলার চেষ্টা করছি।
তবে ব্যথানাশক ঔষধ, ইনজেকশন বা এন্টিবায়োটিক অথবা ব্লাড ট্রান্সফিউশন এর মত ইত্যাদি চিকিৎসা দেওয়া হয় এটি সম্পূর্ণ লক্ষণের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়। এই জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসার মধ্যে প্রথম স্টেজ এবং দ্বিতীয় স্টেজ থাকতে এটির সার্জারী করে চিকিৎসা করা হয়।
তবে প্রথম এবং দ্বিতীয় স্টেজ পার হয়ে অতিরিক্ত হয়ে গেলে আর হাতের নাগালে থাকে না এই জরায়ু ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা। কারণ তখন ক্যান্সারের বীজ সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু রেডিওথেরাপি দিয়ে থাকে সার্জারি করার পূর্বে। কারণ এই রেডিওথেরাপি দিয়ে দিয়ে এর সাইজ কমিয়ে আনা হয়।
আর কেমোথেরাপি ডাক্তার এর অবস্থা ও প্রয়োজন বুজে দিয়ে থাকেন। এবং এই জরায়ু ক্যান্সারের সার্জারী করার পরে নিয়মিত ৩ মাস ৬ মাস এবং ১ বছর অন্তর অন্তর চেকআপে থাকতে হয়।
জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার এই বিষয়ের উপর লিখিত আর্টিকেলে এবং জরায়ু ক্যান্সারের টিকার দাম সম্পর্কে বলার চেষ্টা করব। জরায়ু ক্যান্সার মানে সারভাইকাল ক্যান্সারের ভ্যাকসিন । হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস এটি ক্যান্সারের জন্যে দায়ী বলে থাকে মেডিকেল সাইন্সে। এটি একটি নিরব ঘাতক ক্যান্সার বা রোগ বলে আখ্যায়িত করেছে। তবে পৃথীবিতে এটি একমাত্র ক্যান্সার যেটির টিকা আবিস্কৃত।
জরায়ু ক্যান্সারের টিকা নিয়ে বাংলাদেশে অনেক কিছু হয়েছে কিন্তু জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার করার জন্যে এবং গত ২০২৩ সালের সেপ্টম্বর মাস থেকে সরকারীভাবে বিনা মুল্যে এই জরায়ু ক্যান্সারের টিকা প্রদান করবে বলে ঘোষনা দিয়েছে সরকারের মন্ত্রানালয় বিভাগ। কিন্তু বেসরকারী ভাবে এর ফি ৭৫০০ টাকা করে এই এইচপিভি ভ্যাকসিন বা টিকা কিনে দিতে হত।
এবং এটি শুধু কয়েকটি বেসরকারী হাসপাতালে পাওয়া যেত। যেহেতু এখন এই টিকা সরকারিভাবে প্রদান করছে । এবং আমাদের দেশে এই জরায়ু ক্যান্সারে অনেক নারী মৃত্যু হয় বলে সরকারী ভাবে এই সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারী হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে আবার স্কুল কলেজেও এই টিকা প্রত্যেক ১০ থেকে ১৪ বছরের শিক্ষার্থীদের ক্যাম্প করে ডোজের মাধ্যমে দিয়ে থাকে।
তবে আমাদের পাশের দেশ ভারতে এই টিকা সরকারী ভাবে এবং বেসরকারী ভাবে ও পাওয়া যায়। তবে বেসরকারী ভাবে এই জরায়ু ক্যান্সারের টিকা ২০০-৪০০ টাকার মধ্যে ভারতের বাজারে পাওয়া যাবে বলে বলা হয়েছে । কারন এই টিকা প্রায় এক দশক ধরে চেস্টা করে বায়োটেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের সাথে সিরাম ইনস্টিটিউট যৌথভাবে তাদের দেশে তৈরি করেছে।
জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার শেষ কথা
বেশিরভাগ জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী ( FAQ )
জরায়ু ক্যান্সার কি কারণে হয় ?
এটি একটি ভাইরাস জরায়ু ক্যান্সারের জন্যে প্যাপিলোমা ভাইরাস দায়ী। এই ভাইরাস যে পুরুষের মধ্যে থাকেতার সাথে দৈহিক মিলনের মাধ্যমে এটি নারীদের মধ্যে ঢুকে যায়। তবে এই ভাইরাস ঢুকার সাথে সাথে
ক্যান্সার হয় না।
জরায়ু ক্যান্সারের টিকা কোথায় পাওয়া যায় ?
জরায়ু ক্যান্সারের প্রতিকারের জন্যে এই টিকা এখন দেশে বিনামুল্যে সরকারী হাসপাতালে পাওয়া যায় ।
এবং বেসরকারী ভাবে পাওয়া যায়। তবে বেসরকারী ভাবে এই জরায়ু ক্যান্সারের টিকা একটু দাম দিয়ে কিনে
নিতে হয় ।
জরায়ু ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ কি কি ?
স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া পরিয়ড চলা কালীন অবস্থায় । এবং দৈহিক মিলনের পর রক্তপাত
হওয়া। তারপর রয়েছে দৈহিক মিলনের সময় অস্বস্তি । যৌনিতে ব্যথা অনুভব করা বিশেষ করে প্রস্রাবের সময়।
আরো অনেক লক্ষণ রয়েছে এই জরায়ু ক্যান্সার হওয়ার ক্ষেত্রে ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url