মনোযোগ বৃদ্ধির মেডিটেশন এবং মনোযোগ বৃদ্ধির হোমিও ঔষধ
তাই আমরা আজকে আমাদের আর্টিকেলে মনোযোগ বৃদ্ধির মেডিটেশন নিয়ে কথা বলবো । মনের গতিকে কিভাবে এক জায়গায় স্থির করা যায় সম্পূর্ণ তার একটি গাইডলাইন থাকছে ।
মনোযোগ মানে কি ?
মনোযোগ শব্দটি তে দুইটি বিষয় যুক্ত রয়েছে । একটি হলো মন আরেকটি হলো যোগ। এখানে মন কি এবং যোগ কি আমরা সেই বিষয়ে একটু আলোচনা করবো। আশা করি বহুদিনের মনের অজানা কিছু জানা হয়ে যাবে ।
মন বিষয়টি অত্যন্ত গভীর। মন দেখা যায় না কিন্তু শুধু অনুভব করা যায়। মানুষের দেহের মধ্যে দশ ইন্দ্রিয় রয়েছে। যথা চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক, বাক (কথা), পাদ (পা ), পাণি (হাত), পায়ু (মলদ্বার), উপস্থ (লিঙ্গদ্বার) এই দশ ইন্দ্রিয়ের সাথে মন ওতপ্রোত ভাবে জড়িত ।
কিন্তু আপনি মন কে কখনো এই দশ ইন্দ্রিয় ছাড়া পৃথক করতে পারবেন না। কারণ স্বরূপ বলা যায় আপনি কোন কাজ হাত দিয়ে করলে ও মন কিন্তু হাতের সাথে যুক্ত বা যোগ থাকতে হবে ।
মন যদি না থাকে হাতে কাজ করতে পারবেন না । তার মানে হলো মন হাতের সাথে যোগ হয়েছে বলে মনযোগ দিয়ে আপনি কাজ করতে পারছেন ।
মনোযোগ বৃদ্ধির মেডিটেশন এই আর্টিকেলে মনের সাথে যোগ হওয়া বা যুক্ত হওয়ার জন্যে এই ভাবে মেডিটেশন করতে হয় । মেডিটেশন মানে পুনঃ পুনঃ চেস্টাকে বলা হয়েছে ।
আবার কোন কিছু পড়তে গেলে মুখ দিয়ে পড়তে হবে । অর্থাৎ আপনি যদি মুখ দিয়ে পড়ার সময় মন মুখের সাথে যোগ না হয় তাহলে পড়াও হবে না ।
এইগুলি একটার সাথে মন যোগ হলে এই দশ ইন্দ্রিয় দিয়ে আমরা সমস্ত কর্ম বা কাজ সম্পাদন করতে পারি । কিন্তু এতকিছুর মধ্যে মন কে আলাদা করে আপনি দেখতে পাবেন না । অদৃশ্য এক সত্তা ।
জ্ঞান অর্জন করুন আর কর্ম করুন সব ক্ষেত্রে এই মনের একটা যোগ সাজোশ সমস্ত ইন্দ্রিয়ের সাথে থাকতে হবে আর তা না হলে আপনার কোন কাজ সমাপ্ত হবে না । এই হলো মনযোগ ।
এইবার কিভাবে মনকে এই ইন্দ্রিয়ের সাথে যোগ করবেন তার জন্যে মেডিটেশন করার দরকার । এই মেডিটেশন মনোযোগ বৃদ্ধির কৌশল সম্পর্কে জানতে হবে এর সাথে আরো জানবো মেডিটেশন মাধ্যমে পড়ালেখায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় ।
এবং সাথে থাকছে মনোযোগ বৃদ্ধির হোমিও ঔষধ, মনোযোগ বৃদ্বির জন্যে আইনস্টাইনের ব্যায়াম এবং মনোযোগ বৃদ্ধির জন্যে কোন সময়ে মেডিটেশন করা উচিত ।
আরও পড়তে প্রারেনঃ ম্যাচুরিটি হওয়ার উপায় এবং পরিপক্ক কাকে বলে ?
মনোযোগ বৃদ্ধির কৌশল
এতক্ষন মনোযোগ সম্পর্কে জেনেছি। মনোযোগ বৃদ্ধির জন্যে কি কি কৌশল আমরা অবলম্বন করতে পারি সেই সম্পর্কে এবার আরো গভীরে যাব।
কারণ হচ্ছে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে যে, মন ও যোগ যেহেতু দশ ইন্দ্রিয়ের সাথে হয় সেহেতু আমাদের যথার্থ ভাবে জানা দরকার ।
মনোযোগ বৃদ্ধির নানা কৌশল রয়েছে। আমরা কিছু কিছু কৌশল সম্পর্কে জানবো। যা জানলে আমাদের মনের উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ থাকবে ।
মনযোগ বাড়ার জন্যে আপনার প্রথম প্রথম আপনার দৃষ্টি শক্তি কে (চোখ ) এক জায়গায় করার অভ্যাস করুন। এক জায়গায় করার নিয়ম হচ্ছে যেকোন একটি ছোট বস্তুতে দৃষ্টি শক্তিকে এক জায়গায় বেঁধে রাখুন ।
কিছুক্ষন ওই বস্তুর উপর আপনার চোখ দিয়ে চেয়ে থাকুন । মনে রাখবেন চোখ যেন অন্য দিকে না যায়। যতক্ষণ চোখে জল না আসছে ততক্ষন অভ্যাস করুন। এইভাবে প্রতিদিন অভ্যাস করলে দেখবেন আপনার মন এক জায়গায় যোগ হয়েছে।
এই পদ্বতিতে মনের শক্তি অনেকগুন বেড়ে যায়। এটিকে মেডিটেশন বলে। মনযোগ বৃদ্ধির জন্যে এটি একটি অনন্য পদ্বতি। এই মাধ্যমকে বলে ত্রাটক যোগ। এই যোগের মাধ্যমে মনকে আপনার নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন।
যেকোন বিষয় নিয়ে চিন্তা করুন এবং ওই বিষয়ের ভিতরে প্রবেশ করুন। তাহলে অনেকাংশে আপনার মনোযোগ বৃদ্ধি হবে অনায়াসে। এই সমস্ত যোগগুলি করতে মনে রাখতে হবে প্রথমে একটু কষ্ট। কিন্তু এর স্বাদ অত্যন্ত মধুর ।
আরও পড়তে পারেনঃ কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলে তা বহুদুর সারমর্ম
মেডিটেশন মাধ্যমে পড়ালেখায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়
পড়ালেখায় মনযোগ বৃদ্ধির সমস্যা প্রায় মানুষের বা ছোট ছেলে মেয়েদের থাকে। এই ক্ষেত্রে আপনি আওয়াজ করে পড়ুন। কারণ আওয়াজ বা শব্দ করে পড়লে সেটি মস্তিকের মধ্যে থাকে। তবে মনে রাখতে হবে সেই সময় আপনার মন যেন পড়াই থাকে ।
এছাড়াও আরো একটি পদ্বতি রয়েছে যেমন, মেরুদন্ড সোজা করে বসার অভ্যাস করুন এবং পড়তে বসার আগে পূর্বের চিন্তা বাদ দিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট ধ্যান বা মেডিটেশন করুন । তাহলেও আপনি পড়ালেখায় মনোযোগ বৃদ্ধি করতে পারবেন ।
মনোযোগ বৃদ্ধির হোমিও ঔষধ
মনোযোগ বৃদ্ধির জন্যে অনেক রকমের পদ্বতি অবলম্বন করে থাকে মানুষেরা। কিন্তু যে সব শিক্ষানবিশ ছেলে মেয়েরা সাধারণ ভাবে কোন কিছু পড়ার পড়েও ভুলে যায় তাদের জন্যে মনোযোগ বৃদ্ধির জন্যে হোমিও ঔষধ খুবই উপকারী ।
তবে এই হোমিও ঔষধের কিছু নির্দিষ্ট ডোজ আছে। কারণ আমাদের যে স্নায়ুগুলি মস্তিস্কের গচ্ছিত রাখার কাজ করে সেই স্নায়ু যখন দুর্বল হয় তাদের সবল করার ক্ষেত্রে এই মনোযোগ বৃদ্ধির হোমিও ঔষধ বড়ই উপকারী ।
মনোযোগ বৃদ্ধির হোমিও ঔষধের নাম হচ্ছে অ্যানাকার্ডিয়াম (Anacardium)। এই ঔষধ দিনে কোন ডোজ নেই। এটি সপ্তাহে একদিন ২ ফোঁটা করে একবার মাত্র সেবন করা যায়। এটি সেবনে আপনার মনোযোগ বলেন স্মৃতি বলেন উন্নত হয় ।
মনোযোগ বৃদ্ধির জন্যে কোন সময়ে মেডিটেশন করা উচিত
তাই মনোযোগ বৃদ্ধির জন্যে কোন সময়ে মেডিটেশন করা উচিত সেই সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি। চলুন আমরা তাহলে সেই সময় সম্পর্কে একটু অবগত হয়ে আসি ।
এখানে একটি বিষয় ভাল করে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, মেডিটেশন হচ্ছে স্বাস প্রশ্বাসের উপর। তাই দিনের ভোর বেলায় প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি সময় আপনাকে ঠিক করতে হবে এবং সেটি হবে ভোরের বেলা না হলে সকাল ৮.০০ সময়ের আগে ।
এই সময়ে আপনি সোজা হয়ে যেকোন আসনে বসে মেরুদন্ড সোজা করবেন। এরপর ধীরে ধীরে স্বাস গ্রহণ করুন এবং সেকেন্ডের দিকে লক্ষ্য করুন আবার ঠিক একই সময়ে আপনার প্রশ্বাস ত্যাগ করুন ।
এভাবে কয়েকবার করার পর আপনার চোখ বন্ধ করে স্থিরতা আনুন এবং দেখবেন প্রশান্তি বিরাজ করছেন সাথে আপনার মন ও স্থির হয়ে গেছে । এইভাবে প্রতিদিন একই সময়ে যদি মেডিটেশন করেন তাহলে আপনার মনোযোগ অনেকাংশে বৃদ্ধি হবে এটি নিশ্চিত ।
মনোযোগ বৃদ্ধির মেডিটেশন নিয়ে শেষ কথা
আপনার জন্যেঃ কাজে মনোযোগ ধরে রাখার যত কৌশল
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url