OrdinaryITPostAd

মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি এবং মেলাটোনিন হরমোন কোথা থেকে নিঃসরণ হয়

মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি

রাত হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ঘুম কেন আসছে না।  আমি নিজেও অনেক চেষ্টা করছি ঘুমানোর জন্যে। এই সমস্যা নিয়ে অনেকেই ভুগছেন। কি কারণে এই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন বুজতে পারছেন না। আমাদের মানব শরীরের সমস্ত কিছুই এই হরমোনের প্রভাবে পরিচালিত হয়।  কিন্তু অনেকে জানেনা এই হরমোন আমাদের কিভাবে প্রভাবিত করছে।

পোস্টসূচীপত্রআজকে এই হরমোন সম্পর্কে যদি আপনার ও জানার আগ্রহ নিয়ে আমাদের এই আর্টিকেলে আসেন। তাহলে বলব আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আজকে আমরা আর্টিকেলে মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি সেই নিয়ে কথা বলব। কারণ আমাদের সমস্যার সাথে এই মেলাটোনিন হরমোনের একটি গভীর সম্পর্কে আছে।  তাই চলুন এগিয়ে যাওয়ার যাক ।

মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি

মেডিকেল সাইন্স বলছেন আমাদের মানব শরীরের সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করে এই হরমোন। মানব শরীরে অনেক রকম হরমোনের উপস্থিতি দেখা যায়। ঠিক তেমন করে আজকে যেহেতু মেলাটোনিন হরমোন কাজ কি এই নিয়ে কথা হচ্ছে সেহেতু মেলাটোনিন হরমোনের সম্পর্কে আমরা জানব । অনেকে রাতের বেলায় ঘুমাতে গেলে ভাল করে ঘুম হয় না। 


অনেক চেষ্টার পর ও ঘুমের কোন দেখা পাওয়া যায় না। আমাদের শরীরের ঘুম আসা এবং ঘুম থেকে জাগ্রত করা এই সমস্ত কাজগুলি করে থাকে মেলাটোনিন হরমোন। আপনার শরীরে যখন মেলাটোনিন হরমোন উৎপাদন হয় তখন আপনার ঘুম আসে।  বা ঘুমে আপনি বিভোর হন।


আরও পড়ুনঃ


আবার যখন মেলাটোনিন হরমোন হ্রাস পায় তখন আপনি আবার ঘুম থেকে জাগ্রত হন বা জগ্রত হওয়ার জন্যে সংকেত দেয়। এই হলো মেলাটোনিন হরমোনের কাজ। তবে এটি কৃত্রিমভাবে ল্যাবে উৎপাদন করে। তবে আপনি যখন অন্ধকারে থাকেন তখন আরো মেলাটোনিন উৎপাদন করেন। যা আপনার শরীরের উপর শান্ত প্রভাব ফেলে। 

মেলাটোনিন হরমোন কোথা থেকে নিঃসরণ হয়

এতক্ষন ধরে মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি সেটা জেনেছেন। এবার আমরা জানব মানব শরীরের মেলাটোনিন হরমোন কোথা থেকে নিঃসরণ হয়। উৎপত্তি কথা হতে তা জানলে আমাদের অনেক অজানা কিছু আমরা জানতে পারব। এই মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরণ হয় আমাদের মস্তিকের একটি অংশ থেকে। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে পিনিয়াল গ্রন্থি বলে । 


মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি


এই পিনিয়াল গ্রন্থির অবস্থান হলো আমাদের মস্তিস্কের দুই গোলার্ধের মধ্যে থাকা এপিথ্যালামাসের ভিতরে। যেখান থেকে একটি মেলাটোনিন নামক সেরেটোনিন থেকে তৈরী হয় একপ্ৰকার হরমোন। যা আমাদের ঘুমের নিয়ন্ত্রণ করেন। সেই ঘুম আবার ঋতু ভিত্তিক রীতি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং আমাদের শহরের একটি ছন্দ তৈরী করে ঘুমের। 

মেলাটোনিন হরমোন শরীরের কী কী কাজ করে

মেলাটোনিন হরমোন শরীরের প্রধান কাজ বাদেও অনেক কিছুর উপর প্রভাব ফেলে। আমরা মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি তা সংক্ষিপ্ত আকারে বলার চেষ্টা করেছি পূর্বে। কিন্তু এবার মেলাটোনিন হরমোন আমাদের শরীরের আরো কী কী কাজ করে তা নিয়ে আলোচনা করবো।


যেমন এই মেলাটোনিন হরমোন আমাদের শরীরের ঘুমের এবং ঘুম থেকে জাগ্রত করার কাজ তো করেই। তাছাড়াও আরো অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের শরীরে এই মেলাটোনিন হরমোন। তৎমধ্যে 


  • আমাদের মানব শরীরের একটি সঠিক ভাবে রিদমে পরিচালনা করে এটি আসলে মেলাটোনিন হরমোনের মূল কাজ । এবং যা আমাদের কখন ঘুমাব এবং কখন ঘুম থেকে ঠিক জাগ্রত হব এই রিদম নিয়ন্ত্রণ করে মেলাটোনিন হরমোন যাকে সার্কিডিয়ান রিদম। 
  • মেয়েদের শরীরে প্রতি মাসে যে চক্রের মাধ্যমে ঋতুস্রাব বা মাসিক পরিচালনা হয়। মাসিক হওয়ার জন্যে যে প্রজেস্টেরন নিঃসৃত হয় তার সাথে সমন্বয় করে মেয়েদের ঋতুস্রাব পরিচালনা করে এই মেলাটোনিন হরমোন। 
  • অনেকে রকম স্নায়ুরোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার পিছনেও এই মেলাটোনিন হরমোনের প্রভাব রয়েছে। কারণ এটি স্নাযু ক্ষয়রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।  
  • বার্ধক্য বিলম্ব করণে এই মেলাটোনিন হরমোনের ভূমিকা রয়েছে বলে অনেকের ধারণা । 
  • মানুষের ব্লাড প্রেশার, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং ব্লাড সুগারের ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনেক রকম সহযোগিতা করেন এই মেলাটোনিন হরমোন। 
  • মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও বাড়িয়ে তুলতে এই মেলাটোনিন হরমোনের অনেক ভূমিকা রয়েছে।  
  • এন্টি অক্সিডেন্ড তৈরী করতে সহায়তা করে থাকে ।

মেলাটোনিন হরমোনের বৃদ্ধির জন্যে কি কি খাবার খাওয়া প্রয়োজন

মেলাটোনিন হরমোন আমাদের যেহেতু এটি রিদমে চালানোর জন্যে সহায়তা করে। সেহেতু আমাদের এই হরমোন তৈরি হওয়ার জন্যে প্রয়োজনীয় সব খাওয়ার খাওয়া দরকার। যেসব কিছু খাওয়ার আমাদের মেলাটোনিন হরমোন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে তা হল


মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি


হাঁস-মুরগি, পালং শাক সবজি , ডিম, নাছ, মাশরুম এবং আঙ্গুর এই সমস্ত কিছু আপনি খেতে পারেন । আবার ভিটামিন বি কমপ্লেক্স জাতীয় খাবার মেলাটোনিন হরমোন তৈরী করতে খুব সহায়তা করে । তবে রাতের খাবারে যদি মেথি জাতীয় খাবার রুটির সাথে খাওয়া হয় তাহলে খুব উপকারি এই মেলাটোনিন হরমোন তৈরি করার জন্যে । 

মেলাটোনিন হরমোন কখন নিঃসরণ হয়

মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি তা আমরা জেনেছি এবং মেলাটোনিন হরমোন কোথা হতে তৈরী হয় তাও জেনেছি।  এবার জানব মেলাটোনিন হরমোন কখন নিঃসরণ হয়। আপনারা যারা প্লেনে ভ্রমণ করেছেন বা রেস্টুরেন্টে খাওয়ার খেয়েছেন আবার অনেকে রাত্রি যাপন করেছেন অনেক বড় হোটেলে । 



সেখানে দেখবেন প্লেনে ভ্রমন করার সময় রাত হলে তারা একপ্ৰকার লাইট জানিয়ে দেয় বা হোটেলে এমন কিছু আলোর সমন্বয় করে যা আপনার চোখে প্রশান্তি এনে দেবে। আবার রেস্টুরেন্ট এ যখন দিনার করবেন হালকা আলোর ব্যবস্থা করে।  কারণ এই আলোর মধ্যে আপনার গূঢ়তত্ব নিহিত রয়েছে। 


কারণ এই আলো আপনাকে ঘুম আনতে সহায়তা করবে। অন্ধকার বা অন্ধকারের মত আলোতে আপনার মেলাটোনিন হরমোন  নিঃসরণ হয়। এক কোথায় বলা যায় অন্ধকারে আপনার মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরণ হয়। আবার আলোতে তা হ্রাস পায়। 

মেলাটোনিনের ঘাটতি হলে কী কী সমস্যা হতে পারে ?

যেহেতু মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি এই নিয়ে আমাদের এই আর্টিকেল সেহেতু আমরা মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি তা বলেছি। এবার মেলাটোনিনের ঘাটতি হলে কী কী সমস্যা হতে পারে এই কথা যেহেতু এসেছে সেহেতু আমরা বলব । 


মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি

যা কিছু মেলাটোনিন হরমোন তৈরী করে থাকে আমাদের মানব দেহে। সেই সব কিছুর সমস্যা বা অভাব দেখা দিবে যদি মেলাটোনিনের ঘাটতি হয়। একথায় বলতে গেলে মেলাটোনিনের ঘাটতি হলে অনিদ্রা দেখা দিতে পারে। যেভাবে মেলাটোনিন হরমোন ঘুম আনে শান্তির প্রভাব তৈরী করে একই ভাবে সেই শান্তির প্রভাব থেকে অভাবে থাকবেন। 

কীভাবে মেলাটোনিন হরমোন প্রাকৃতিক উপায়ে বৃদ্ধি করা যায়

মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি এই কথার সাথে চলতে চলতে আমরা এখন বর্তমানে অনেক দূর চলে আসছি। এবার জানার চেষ্টা করব কিভাবে  মেলাটোনিন হরমোন প্রাকৃতিক উপায়ে বৃদ্ধি করা যায়। এই মেলাটোনিন হরমোন ঔষধের মাধ্যমে ও বাড়ানো যায়। 


তবে মনে রাখতে হবে প্রাকৃতিক উপায়ে যদি মেলাটোনিন হরমোন বৃদ্ধি করা যায় তাহলে ঔষধ সেবন না করলেও ভাল। কারণ মেডিসিন এক প্রকার বিষ। মেডিসিন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া সেবন করবেন যদিও করার খুব বেশি প্রয়োজন হয়।


প্রাকৃতিক উপায়ে মেলাটোনিন হরমোন কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় আমরা সেটা জানার চেষ্টা করি। বেশি কিছু না শুধুমাত্র কয়েকটি পদ্বতি গ্রহণ করলে আপনি খুব সহজে মেলাটোনিন হরমোন প্রাকৃতিক উপায়ে বৃদ্ধি করতে পারবেন। 


  • প্রতিদিনের ঘুমের রুটিন মেনে চলুন। সময়ের যাতে হেরফের না হয়। কারণ নির্দিষ্টতা ঠিক রাখলে আপনার শরীরের মেলাটোনিন হরমোন বৃদ্ধি হয় এবং ভাল করে নিঃসরণ হয়। 
  • ক্যাফেইন জাতীয় খাবার এবং ধূমপান থেকে বিরত থাকবেন। কারণ এটি আপনার মেলাটোনিন হরমোন বৃদ্ধি করতে বাধা প্রধান করে। 
  • সূর্যের আলো মানব দেহের জন্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।  এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমান সূর্যের আলো লাগান। 
  • মোবাইল, কম্পিউটার বা ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস থেকে দূরে থাকুন বা খুব কম পরিমানে এইগুলি ব্যবহার করুন মানে একটু ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করুন। 
  • যতবেশি সম্ভব দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। গবেষণায় দেখা গেছে যারা বেশি দুশ্চিন্তায় থাকেন তাদের মেলাটোনিন হরমোন উৎপাদনে বাধাগ্রস্ত করে এই দুশ্চিন্তা।  তাই দুশ্চিন্তা করলে মানুষের ঘুমের খুব ক্ষতি হয় ।


এই সমস্ত কিছু আপনি নিত্যদিন ফলো করলে খুব সহজে বিনা ঔষধ সেবনের দ্বারা নিজের শরীরে মেলাটোনিন হরমোন বৃদ্ধি করতে পারবেন। 

মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি এই নিয়ে শেষ কথা

অনেকক্ষন ধরে আমরা এই হরমোন নিয়ে বক বক করেছি। হয়ত এই আলোচনা বা বক বক করা আপনাদের অনেকের কাজে এসেছে বা কিছু হলেও জেনেছেন। মেলাটোনিন হরমোনের কাজ কি এই নিয়ে বিশেষ করে আর তেমন কোন কথা জিজ্ঞেস করার আছে বলে আমি মনে করি না ।  


তারপর ও বলবো এই মেলাটোনিন হরমোন আমাদের শরীরের প্রশান্তি দেওয়ার একটি বিশেষ মেডিসিন।  যা আমরা প্রাকৃতিক ভাবে পেয়ে থাকি। তাই এটিকে নষ্ট না করে আমাদের শান্তি রক্ষার জন্যে নিজেকে সচেতন থাকতে হবে। ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন । 

কিছু অজানা প্রশ্ন ( FAQ)


মেলাটোনিন হরমোনের কি প্রতিটা মানুষের মধ্যে বিদ্যমান ?

হ্যা অবশ্যই এই মেলাটোনিন হরমোন প্রাকৃতিক ভাবে সবার মধ্যে বিদ্যমান । এটি প্রতিটা মানুষের মস্তিস্কের পিনিয়াল গ্রন্থি থেকে নিঃসরণ হয়ে মানব দেহে শান্তির প্রভাবে বয়ে আনে । 


মেলাটোনিন হরমোনের অভাবে কি ঔষধ খাওয়ার দরকার ?

সেটা নির্ভর করবে আপনার মনের উপর।  কারণ এই মেলাটোনিন হরমোনের অভাব হয় কেবল মাত্র অনিয়মিত ঘুমের জন্যে এবং কিছু অনিয়ন্ত্রিত চলাফেরার উপর। প্রাকৃতিক ভাবে ও এই মেলাটোনিন হরমোনের বৃদ্বি করা যায়। তাছাড়াও কৃত্রিমভাবে যেহেতু এই মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন করা যায় ল্যাবে।  সেহেতু আপনি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই মেলাটোনিন হরমোনের ঔষধ সেবন করতে পারেন। 


মেলাটোনিন হরমোনের ঔষধ করলে কি কোন সাইডএফেক্ট হয় ?

হ্যা অবশ্যই এই মেলাটোনিন হরমোনের ঔষধ সেবন করলে কিছু সাইটএফেক্ট তো রয়েছে। যেমন মেলাটোনিন হরমোনের ঔষধের সাইটএফেক্ট গুলি হলো বমি বমি ভাবে , মাথা ব্যথা এবং মাথা ঘোরা তাছাড়াও ত্বকে লালচে ভাব হতে পারে, ফোসকে পড়তে পরে এবং চুলকানি ও হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪