OrdinaryITPostAd

রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা ও রুই মাছের অর্থনৈতিক গুরুত্ব


রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা

রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা - রুই মাছ আমাদের নিত্যদিনের খাওয়ারের তালিকার একটি প্রিয় খাবার । ছোট কাল থেকেই আমরা এই রুই মাছ খেয়ে আসছি বলেই আমরা খাই । কিন্তু বর্তমান যুগে রুই মাছ খেলে কি হয় বা রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা কি এই সম্পর্কে জানা আমাদের দরকার । কারণ ভাল মন্দ জেনে মাছ খেলে অনেক কিছু সম্পর্কে সচেতন হওয়া যায় ।

 সুচীপত্রঃতাই আজকে আমরা রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করবো এবং রুই মাছের ডিমের উপকারিতা, রুই মাছে কি প্রোটিন বিদ্যমান, রুই মাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম কি ? এই সব নিয়ে আজকের আর্টিকেল থাকছে আমার প্রিয় পাঠক বন্ধুরা ।  আশা করি সাথে সময় দিলে নিশ্চয় আপনাদের উপকারে আসবে বলে আমরা আশাবাদী । 

রুই মাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম কি

রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার আগে আমাদের রুই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম কি তা একবার জেনে আশা দরকার বন্ধুরা । রুই মাছ আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত সুস্বাদু ও জনপ্রিয় একটি মাছ । যে মাছে অধিক পুষ্টিগুণ রয়েছে এককথায় যাকে বহু পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ মাছ হলো এই রুই মাছ। 

বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে যেহেতু এই মাছের গুনাগুন বিচার করা হয় সেহেতু রুই মাছের ও একটি বিজ্ঞানসম্মত নাম রয়েছে যাকে বলে বৈজ্ঞানিক নাম । 


কারণ প্রত্যেক প্রাণিকুল এবং জীবকুল সবার একটি করে সাধারণ নামের বাইরে বিজ্ঞান সম্মত নাম থাকে । তেমন করে রুই মাছের বিজ্ঞান সম্মত নাম হচ্ছে Labeo Rohita . আর ইংরেজিতে রুই মাছকে বলে Rohu Carp . এটি বাংলাদেশ ভারত এবং এশিয়া মহাদেশের প্রায় দেশে বহুল পরিচিত একটি মাছ ।  

রুই মাছ কত টাকা কেজি

আমাদের বাংলাদেশে এই রুই মাছের চাহিদা যেমন আছে ঠিক তেমন করে দামটা ও একটু বেশি হয়ে থাকে সিজনাল ভাবে । রুই মাছ চলে না এমন কোন ঘর বাকি নেই । কারণ আমরা মাছে ভাতে বাঙালি বলে একটা প্রবাদ আছে ।

রুই মাছের মান অনুযায়ী দামের পার্থক্য হয়ে থাকে । যেমন দেশি রুই মাছ আবার মিয়ানমারের রুই মাছ বা বিদেশি রুই মাছ । এর সাথে সাইজের মধ্যে কয়েকরকম তারতম্য থাকে ।


দেশি রুই মাছ পাবেন সাইজে যদি ১ থেকে ১.৫ কেজি পর্যন্ত হয় তাহলে তার দাম হবে কেজি প্রতি  ২০০ থেকে ২২০ পর্যন্ত । ০.৫ কেজি থেকে যদি ১ কেজি এর নিচে হলে এর দাম ১৮০ থেকে ২০০ ভিতরে থাকে । 


তবে এই দামগুলি হচ্ছে যখন রুই মাছের সিজন থাকে তখনের দরদাম সাইজ এবং কেজি প্রতি । আর একই সিজনে বিদেশী বা বার্মার অথবা মায়ানমারের রুই মাছ কিনতে যান তাহলে সাইজ যদি হয় ২.৫ কেজি থেকে ৪ বা ৫ কেজি ওজনের । 


তাহলে আপনাকে কেজি প্রতি গুনতে হবে ২৬০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত অথবা এর চেয়ে বেশি হলে ৩০০ পর্যন্ত গড়াতে পারে । 


রুই মাছ সিজনাল ছাড়া যদি কিনতে জান তাহলে প্রত্যেক কেজিতে করে অন্তত ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি গুনতে হবে । তবে আমাদের দেশে বিশেষ করে বার্মার রুই মাছগুলি বেশি বিক্রি হয় । 


কারণ এই বার্মার বা মায়ানমারের রুই মাছ গুলি অনেকটা অপচয় থেকে রক্ষা করে কেবল তাদের সাইজের কারণে । বিশেষ করে আমাদের দেশে বিশেষ করে কোন খাবারের প্রোগ্রামে এই মাছের খুব চাহিদা রয়েছে যদিও এই বার্মার রুই মাছের দাম ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায় ।


আরও জানুনঃ জোঁকের তেলর উপকারিতা

রুই মাছের শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য

রুই মাছের অনেক রকম বৈশিষ্ঠ বিদ্যমান না হলে তাদের রুই মাছের মত দেখতে অনেক রকম মাছ রয়েছে । চেনার জন্যে রুই মাছের বৈশিষ্ট গুলি তুলে ধরার চেষ্টা করলাম ।

  • ভাঁজঃ রুই মাছের পুরু ঠোঁট ভিতরের দিকে ভাঁজ করা দেখা যায় ।
  • মুখঃ রুই মাছের মুখে উপরে ঠোঁটের মধ্যে একজোড়া গোঁফ দেখা যায় ।
  • রংঃ পিঠের নিচের দিকে বাদামি রঙের হয় ।
  • আকৃতিঃ  রুই মাছের সামনের দিকে দেখতে সরু এবং পিছনের দিকে দেখতে বেশ চওড়া । 
  • পেটের বর্ণঃ রুই মাছের পেট রুপালি ও সাদা রঙের হয়ে থাকে ।
  • লম্বাঃ রুই মাছ লম্বায় প্রায় ২০০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয় 
  • ওজনঃ ওজনে এই রুই মাছ প্রায় ৪০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে । 
  • জীবনকালঃ এই রুই মাছ অন্তত ১০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে । 


যারা বিশেষ করে রুই মাছের চাষ করেন তাদের জন্যে এই বৈশিষ্ট গুলি জানার খুব বেশি দরকার । কারণ এতে করে তারা সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারে । অথবা সাধারণ মানুষ যারা এখনো রুই মাছের বৈশিষ্ট জানেনা তাদের জন্যে ও প্রয়োজনীয় তথ্য । 

রুই মাছে কি পুষ্টিগুন বিদ্যমান

রুই মাছে আর যাই থাকুক আপনার শরীরে চর্বি জমে না । রুই মাছ অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি সাধু পানির মাছ এবং সুস্বাদু কাঁটা যুক্ত । রুই মাছে পুষ্টিগুনের মধ্যে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড এবং প্রোটিন আরো রয়েছে ভিটামিন এ ই ডি । 


রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা

তাছাড়াও রয়েছে বি ২, বি ৬ এবং বি ১২ । কার্বোহাইড্রেড, সোডিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, জিংক, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম এবং ফোলেট। এই সকল পুষ্টিগুণ কেবল এই রুই মাছের মধ্যে বিদ্যমান । মাংসের চেয়েও যা সহজে খুবই হজমযোগ্য একটি মাছ হলো এই রুই মাছ। 

রুই মাছের উপকারিতা

আজকের আর্টিকেলটি হচ্ছে রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে । তারপর ও অনেক কিছুই জানার রয়েছে তাই আমরা চেষ্টা করেছি রুই মাছ নিয়ে কিছু অজানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করার । রুই মাছের অনেক উপকারিতা রয়েছে। তৎমধ্যে আমরা কিছু উপকারিতা নিম্নে লিস্ট আকারে বলার চেষ্টা করছি প্রিয় পাঠক বন্ধুরা ।


রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা

  • মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে প্রোটিন ও ভিটামিনের উপস্থিতির কারণে । 
  • রুই মাছ মানুষের ১৫% স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয় । 
  • হার্টের জন্যে খুবই উপকারী কারণ এতে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে ।
  • স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্য খুবই ভাল রাখার ক্ষেত্রে রুই মাছের ভূমিকা অপরিসীম ।
  • চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখে কারণ রুই মাছে ভিটামিন এ রয়েছে ১৪০ আইইউ । 
  • শান্তিপূর্ণ ঘুমের ক্ষেত্রে ভাল এবং ইনসোমিয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ।
  • একজিমা থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে এই রুই মাছ ।
  • বয়স্ক মানুষের জয়েন্টের ব্যথা থেকে রক্ষা করে ।  
  • ব্লাডপ্রেশার এবং ডায়বেটিসের ক্ষেত্রে বেশি উপকারিতা বয়ে আনে রুই মাছ ।
  • ক্যালোরি থাকার কারণে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ও অপরিসীম উপকার বয়ে আনে ।
  • রুই মাছে বিদ্যামান প্রোটিন ও ফাইবার কোষ্টকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয় ।
  • ভিটামিন ই এবং ভিটামিন বি ১২ এর উপস্থিতির জন্যে ত্বকের উপকার করে । 

রুই মাছের অপকারিতা 

রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে শুধু যে উপকারিতা রয়েছে তা নই । অর্থাৎ বেশির উপকারিতা থাকলেও কিছুটা অপকারিতা রয়েছে । তবে তা মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করার মত তেমন কিছু নই । আমরা সেই বিষয়ে নজর দিয়ে বলার চেষ্টা করছি অপকারিতা গুলি কি ।

  • বিশেষ করে যে রুই মাছ গুলি বিভিন্ন খাবার দিয়ে চাষ করার হয় এবং বিষাক্ত পানির মধ্যে চাষ করা হয় সেক্ষেত্রে আপনার একটু অপকারিতা বয়ে আনতে পারে । 
  • রুই মাছ খেলে অনেকের মধ্যে একটি এলার্জি জাতীয় সমস্যা দেখে দিতে পারে তবে বেশির ভাগ মানুষের ক্ষেত্রে নই । যেমন লালচে ভাব, ফুরফুড়ি, বমি বমি ভাব এই রকম। 
  • রুই মাছের অপকারিতার মধ্যে মাছে বেশি ক্যালোরি থাকার কারণে বেশি খেলে ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটু সমস্যা হতে পারে বা ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে ।

রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সাথে কিছু সতর্কতা

  • রুই মাছ যদিও সুস্বাদু তারপর ও বেশি খাওয়া উচিত নই এক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা বেশি প্রয়োজন । 
  • বিষাক্ত পানি এবং অপরিষ্কার জায়গায় চাষ করার রুই মাছ খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবল্বন করা দরকার । কারণ মাছের সাথে বিষাক্ত কিছু জীবাণু আপনার শরীরের প্রবেশ করতে পারে । 
  • রান্না করার সময় ভাল করে সিদ্ধ হয়েছে কিনা তা ভাল করে দেখে নিয়ে তারপর খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা থাকুন । 

রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা পাশে অর্থনৈতিক গুরুত্ব

আমরা শরীরের জন্যে এতক্ষন রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করেছি । রুই মাছ নিয়ে যদিও আমরা স্বাস্থ্য সম্পর্কে বার্তা দিয়ে থাকি কিন্তু রুই মাছের অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে অনেক বেশি আমাদের দেশের জন্যে ।


 রুই মাছ নিয়ে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে খুব সহজে লাভবান হওয়ার একটি মাছ । এই রুই মাছের চাষ করে আমাদের দেশে অনেক বেকার তাদের বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে । কারণ এটি খুব সহজে চাষ করা যায় । 


পুকুর ও বিল কিংবা অনাবাদি জমিতেও আপনি খুব সহজে চাষ করতে পারেন । অনেকে রুই মাছের চাষকে জীবনের একটি ব্যবসায়িক অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং জীবনের অভাবের চাকা ফিরিয়ে বর্তমানে ধনি হয়েছে । 


কারণ এটি খুব তাড়াতাড়ি বড় হয় এবং বাজারে এর দাম খুব ভাল । যার দরুন আমাদের দেশের অনেক মৎস চাষিরা এবং নতুন উদ্যোক্তারা দেশের অভাব পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করছেন । 


এতে করে বৈদেশিক মুদ্রাও সরকারি তহবিলে রেমিটেন্স হিসেবে আয় হচ্ছে আবার অনেকের কর্মসংস্থান ও হচ্ছে । আপনি গ্রামে গেলে বেশির ভাগ দেখতে পাবেন এই পুকুর কিংবা বড় হাওড় এর একটি অংশ এই রুই মাছের চাষ করেই অর্থনৈতিক উন্নতি করছেন ।  

রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে লেখকের শেষ মন্তব্য

রুই মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেক্ষন ধরে আমরা বক বক করেছি । বাচালতা না নিয়ে রুই মাছ সম্পর্কিত কোন তথ্য আশা করি আর জানার কথা না । তারপর যেহেতু জানার শেষ নেই সেহেতু পাশে থাকবেন শেয়ার করবেন এবং আমাদের যোগাযোগের ঠিকানায় গিয়ে জানার আগ্রহ সম্পর্কে বলতে পারেন আমরা সেই বিষয়ে বলার চেষ্টা করবো ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪